‘সিটিজি টাইমস’ ৮ বছর পেরিয়ে ৯ম বর্ষে এসে কতটা সফল?

Posted by

ঢাকঢোল পিটিয়ে সিটিজি টাইমস ডটকম-এর যাত্রা শুরু হয়নি, শুরু করতে পারিওনি। আচমকা শুরু করেছিলাম । প্রস্তুতি ছিলনা বললেই চলে। তবে টিকে আছি। এখনো শুরুর পর্যায়ে আছি বলে ভাবি।

সিটিজি টাইমস ডটকম

আমরা আওয়াজের চেয়ে কাজেই বিশ্বাসী। ধৈর্য ধারনে বিশ্বাসী । ধীরে এগোবো কিন্তু দ্রুত চলতে গিয়ে হোঁচট খেতে চাইনা।

গণমাধ্যম কর্পোরেট মালিকানা বিষয়টি স্পষ্টতর হওয়ার পর প্রধানত দুটো বিষয় খুব উচ্চারিত হচ্ছে। গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ আর কতদূর? গণমাধ্যমের চরিত্র আর কতদিন? ‌ গণমাধ্যম কার হাত ধরে এগিয়ে যাবে? প্রিন্ট, টেলিভিশন নাকি অনলাইন?

এই আলোচনায় প্রথমদিকে ধোপেই টিকেনি অনলাইনের নাম। গণমাধ্যম বলতেই প্রিন্ট মাধ্যম, এরপর মানুষের আগ্রহের স্থানটি ছিল টেলিভিশন বা স্যাটেলাইট নিয়ে।

ক্রমেই আস্থা এবং পছন্দের স্থানটি দখল নিয়েছে অনলাইন গণমাধ্যম।

আগামী দিন গুলো হবে অনলাইন সাংবাদিকতার। গোটা বিশ্বেই এই আওয়াজ। এবং এটাই সত্যি ।

বাংলাদেশে এর লক্ষণ পুরোমাত্রাই টের পাওয়া যাচ্ছে । অনলাইন পোর্টালে বড় বড় মিডিয়া বিনিয়োগ আসছেন।

পার্থক্য শুধু এক জায়গায়। এখনো বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারকদের বড় একটা অংশের পছন্দ প্রিন্ট মিডিয়া ।

মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন- 

বিজ্ঞাপনদাতারা অনলাইন পোর্টালে ঝুঁকছেন ঠিকেই, কিন্তু প্রিন্ট আর ইলেকট্রনিক মাধ্যমকেই পণ্যের প্রচারে বেশি সহায়ক বলে মনে করেন ।

তাছাড়া রাজনীতি, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে যারা বিশ্লেষণ করেন তারা প্রিন্ট মিডিয়ায় অনেক বেশি অভ্যস্ত।

সব মিলিয়ে অনলাইন গণমাধ্যম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই; কিন্তু ছাপানোর কাগজের গুরুত্ব ফুরিরে যায়নি।

অন্যদিকে, গণমাধ্যমের ‘মাধ্যম’ নিয়ে ভাবা-যুক্তি-তর্কের পরিবর্তে এখন ফোকাসটা বেশি থাকে- কোন অনলাইন মাধ্যমটি নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে, বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে, কোন মাধ্যম কতটা দ্রুত সংবাদটি দিচ্ছে, এসব নিয়ে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১ লা অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে “সিটিজি টাইমস” আত্মপ্রকাশ করে।

ঢাকঢোল পিটিয়ে সিটিজি টাইমস ডটকম-এর যাত্রা শুরু হয়নি, শুরু করতে পারিওনি। আচমকা শুরু করেছিলাম ।

প্রস্তুতি ছিলনা বললেই চলে। তবে টিকে আছি। এখনো শুরুর পর্যায়ে আছি বলে ভাবি।

তবে, ঢাকঢোল পিটিয়ে আমাদের আগে পরে যারা শুরু করেন, তারা অনেকেই রনেভঙ্গ দিয়েছেন।

কারো বিনিয়োগকারীর প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ করেননি, কেউ কেউ ওয়েব পোর্টালকে ব্যক্তিগত কাজে বেশি ব্যবহারের চেষ্টা করেছেন বলে শুনেছি।

আমরা আওয়াজের চেয়ে কাজেই বিশ্বাসী। ধৈর্য ধারনে বিশ্বাসী । ধীরে এগোবো কিন্তু দ্রুত চলতে গিয়ে হোঁচট খেতে চাইনা।

১৯ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি শুরু করাটাই কঠিন। শুরু করেছি সবার সহযোগিতা চাই।

একটু একটু করে চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সিটিজি টাইমস ডটকম ঠিকেই এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যেই সিটিজি টাইমস ডটকমের ফেসবুক লাইক প্রায় ৩ লক্ষ ১১ হাজার ছুঁয়েছে।

সিটিজি টাইমস এর একজন কর্মী হিসেবে আমি বলতে পারি, সিটিজি টাইমস ডটকম কখনো গসিপ নিউজ ছাপায় না।

এটি এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য যে পাঠক মনে করেন, সিটিজি টাইমসে নিউজ প্রকাশ হওয়া মানে ঘটনাটি সত্য। কারণ আমরা অন্তত ৯০ ভাগ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া কখনোই নিউজ ছাপি না।

তাই এর মধ্যে পাঠকের হৃদয়ে সিটিজি টাইমস ডটকম বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।

নানা স্বল্পতা, সংকটের পরেও আমরা প্রায় প্রতিদিনই নতুন কিছু চিন্তার খোরাক দিতে পারছি পাঠককে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসঙ্গতিও তুলে ধরছি নিয়মিত।

অনলাইনে অভ্যস্থ পাঠকরা কাগজের পত্রিকার খবরে আকর্ষণ বোধ করেন না।  তা ছাড়া, অনলাইন সংবাদপত্রে স্থান সংকুলানের কোনো সমস্যা নেই।

ফলে একজন অনলাইন সাংবাদিক তার স্টোরিকে বিভিন্ন তথ্যে সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করতে পারেন।

অনলাইন সাংবাদিকতায় সবচেয়ে যারা সবার আগে সব খবর দিতে পারে তাদের সাইটেই ভিজিটর বেশি হয়। পাঠক ধরে রাখার জন্য অনলাইনে অনেক কৌশল করতে হয়।

তবে তাৎক্ষণিকতার সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতা জরুরি। অনলাইন সংবাদপত্র একবার বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে সহজে তা ফেরাতে পারে না।

সিটিজি টাইমস ডটকম সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকতার পরিবর্তে বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর জোর দেয়।

ফলে আমরা হয়তো কিছুক্ষেত্রে ‘তাৎক্ষণিক’ নই, কিন্তু বস্তুনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে আমরা আপোষ করি না।

আমরা জানি, বিশ্ব এখন ইন্টারনেটময়। মানুষকে খুব দ্রুত আকৃষ্ট করার এক অদ্ভূত শক্তি রয়েছে এই ইন্টারনেট ব্যবস্থার।

মানুষ এখন আপ-টু-ডেট থাকার জন্য সকালের পত্রিকার অপেক্ষায় আর থাকেন না, যখন কোনো খবর ঘটে, তখনই তা পাওয়ার জন্য ইন্টারনেটের সহায়তা নিচ্ছেন।

ইন্টারনেটের বদৌলতে কোনো ঘটনা চলমান অবস্থায়ও এ সম্বন্ধে সর্বশেষ তথ্য জেনে যাচ্ছে মানুষ। এর জন্য টেলিভিশনের পর্দার সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে না।

মুহূর্তের মধ্যেই সেই খবর বা তথ্য ‘ব্রেকিং নিউজ’ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে।

বলা যায়- পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন আর রেডিও’র পাঠক-দর্শক-শ্রোতা এখন দিনদিন অনলাইনমাধ্যমের ভোক্তায় পরিণত হচ্ছে। জন্ম হয়েছে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টারের।

অর্থাৎ একইসাথে একজন রিপোর্টার এখন ছবি তুলছেন, ভিডিও শ্যুট করছেন, স্মার্টফোন বা ট্যাব বা ল্যাপটপ থেকে অনলাইনের জন্য নিউজ লিখছেন (কখনো বা আপলোডও করছেন), আবার বিট থেকে ফিরে অফিসে এসে তা অনলাইনের জন্যও প্রস্তুত করছেন।

মিডিয়ায় এ ধরনের রিপোর্টারের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছেই। আমরা সৌভাগ্যবান যে, সিটিজি টাইমস-এ কর্মরত আছেন একঝাঁক প্রতিভাবান সংবাদকর্মী।

অনলাইন গণমাধ্যমের পরিবারে যে কয়টি গণমাধ্যম বাংলাদেশে পাঠকদের কাছে শক্তিশালী জায়গা করে নিয়েছে তার মধ্যে সিটিজি টাইমস ডটকম অন্যতম।

বিষয়টি আরো সংক্ষেপ এবং পয়েন্ট-আউট করলে বলতে গেলে- ইতিবাচক সাংবাদিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে এরই মধ্যে স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছে চট্টগ্রামের প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিটিজি টাইমস ডটকম। সিটিজি টাইমস বর্তমানে অগ্রসর পাঠকের পোর্টাল।

মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন- 

আমাদের মূল্যায়ন পাঠকের হাতে। আমরা এতটুকু বলতে পারি, সিটিজি টাইমস-এ আমরা তৃপ্ত।  আমরা গর্ববোধ করি সম্ভাবনাময় এই ওয়েব পোর্টালের অংশীদার হতে পেরে।

সিটিজি টাইমস নবম বর্ষে পদার্পণ করেছে আজ। ”চট্টগ্রামের সব খবর সবার আগে” স্লোগান নিয়ে এই অনলাইন নিউজ পোর্টালটির যাত্রা শুরু ২০১২ সালের ১ লা অক্টোবর। যাত্রা শুরুর দিন থেকেই সকল শ্রেণির মানুষের স্বপ্ন, সম্ভাবনার মুখপাত্র এটি।

-মসরুর জুনাইদ, সম্পাদক – সিটিজিটাইমস ডটকম; E-mail: [email protected]

মতামত দিন